Real life

জুমু'আর দিনের ফযিলত

জুমু’আর দিনের ফযিলত

জুমু'আর দিনের ফযিলত
فضل يوم الجمعة

জুমার দিন ইসলাম ধর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফযিলতপূর্ণ। কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে জুমার দিনের কিছু ফযিলত নিচে উল্লেখ করা হলো:

১. জুমার দিনের বিশেষত্ব
আল্লাহ তাআলা জুমার দিনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ (سورة الجمعة٦٢:٩)
❝ হে ঈমানদারগণ! যখন জুমার দিনের নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে দ্রুত অগ্রসর হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। ❞ (সূরা জুমু’আহ, ৬২:৯)

২. সর্বোত্তম দিন
خير يوم طلعت عليه الشمس يوم الجمعة، فيه خلق آدم، وفيه أُدخل الجنة، وفيه أُخرج منها. (صحيح مسلم: 854)রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: ❝ সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনেই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। ❞

(সহীহ মুসলিম, হাদিস: ৮৫৪)

৩. গুনাহ মাফের সুযোগ

قال رسول الله ﷺ: «من اغتسل يوم الجمعة، ثم راح في الساعة الأولى، ثم استمع وأنصت، غُفر له ما بينه وبين الجمعة الأخرى وزيادة ثلاثة أيام». (صحيح مسلم: 857)
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: ❝ যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে, নামাজের জন্য তাড়াতাড়ি যায়, ইমামের কাছে বসে মনোযোগসহকারে খুতবা শোনে এবং অযথা কোনো কথা বলে না, তার এই জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করা হয়। ❞ (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ৮৫৭)

৪. দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত:
জুমার দিন একটি বিশেষ সময় রয়েছে, যখন বান্দার করা দোয়া অবশ্যই কবুল হয়।
قال رسول الله ﷺ: إن في الجمعة ساعة لا يوافقها عبد مسلم وهو قائم يصلي يسأل الله شيئًا إلا أعطاه إياه) .صحيح البخاري: 935، صحيح مسلم: 852(
জুমার দিন একটি বিশেষ সময় রয়েছে, যখন বান্দার করা দোয়া অবশ্যই কবুল হয়।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন:❝ জুমার দিন এক ঘণ্টা আছে, যখন কোনো মুসলিম বান্দা নামাজে থাকে এবং আল্লাহর কাছে যা চাইবে, আল্লাহ তাআলা তা তাকে দান করবেন। ❞ (সহীহ বুখারি, হাদিস: ৯৩৫; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ৮৫২)
উলামাদের মতে, এই বিশেষ মুহূর্তটি আসরের পর থেকে মাগরিবের আগে হতে পারে।

৫. গুনাহ মাফের উপায়
قال رسول الله ﷺ :الصلوات الخمس، والجمعة إلى الجمعة، ورمضان إلى رمضان، مكفرات لما بينهن إذا اجتنبت الكبائر. (صحيح مسلم: 233)
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: ❝ জুমার দিন ছোট ছোট গুনাহগুলো ক্ষমা করা হয়, যদি বড় গুনাহ থেকে বিরত থাকে। ❞ (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ৮৫৭)

৬. সূরা কাহফ তিলাওয়াতের গুরুত্ব:
قال رسول الله ﷺ: من قرأ سورة الكهف يوم الجمعة أضاء له من النور ما بين الجمعتين. (المستدرك على الصحيحين للحاكم: 2/399، وقال صحيح على شرط مسلم)
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: ❝ যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে নূর বা আলো দান করা হবে। ❞ (সুনান কুবরা, বায়হাকি; সহীহ জামে সগীর: ৬৪৭০)

৭. জান্নাতের দিন
قال رسول الله ﷺ:
إن من أفضل أيامكم يوم الجمعة، فيه خُلق آدم، وفيه قُبض، وفيه النفخة، وفيه الصعقة، فأكثروا علي من الصلاة فيه، فإن صلاتكم معروضة علي. (صحيح أبي داود: 1047)
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: ❝ জান্নাতে থাকা মানুষরা জুমার দিনকে ঈদের দিনের মতো অনুভব করবে। এই দিন তাদের আল্লাহর সাক্ষাৎ করার সুযোগ হবে। ❞ (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২৮৩২)
জুমার দিন মুসলিমদের জন্য এক অনন্য সুযোগ আত্মশুদ্ধি, ইবাদত ও আল্লাহর রহমত লাভের। তাই এই দিনের প্রতিটি মুহূর্তকে মূল্যায়ন করা উচিত।